মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এর খাসতালুক শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সম্বলিত দাদার অনুগামীদের ব‍্যানারে ছয়লাপ

21st November 2020 8:53 pm বর্ধমান
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এর খাসতালুক শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সম্বলিত দাদার অনুগামীদের ব‍্যানারে ছয়লাপ


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( বর্ধমান ) :  ‘লক্ষ্য স্থির,এগচ্ছে বীর ’ আমরা দাদার অনুগামী। এমন উদ্ধৃতি লেখা শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সহ ফ্লেক্সে এবার ছয়লাপ হল খোদ রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথের খাসতালুক। শনিবার সকালে পূর্বস্থলী দক্ষিন বিধানসভার বিভিন্ন জায়গায় এমন অজস্র ফ্লেক্স দেখা যেতেই শোরগোল পড়ে যায় । তুঙ্গে ওঠে রাজনৈতিক চাপানউতোর । বেলা বাড়তে এলাকা থেকে সেইসব ফ্লেক্স খুলে দেয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও  ব্লক তৃণমূল সভাপতির অনুগামীরা । দাদার অনুগামীদের এমন ফ্লেক্স জেলার মেমারি ২ ব্লক ও মন্তেশ্বরের  বিভিন্ন জায়গাতেও দেখা যাচ্ছে ।রাজ্যের দাপুটে নেতা তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থনে লাগানো এইসব ফ্লেক্স নিয়ে এখন  তৃণমূল শিবিরে শুরু হয়েছে জল্পনা ।  কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী দক্ষিন বিধানসভা এলাকাটি রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের খাসতালুক হিসাবেই পরিচিত।এদিন এই বিধানসভার ধাত্রীগ্রামের পোষ্ট অফিস মোড়,ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকা সহ বেশ কিছু এলাকায় দেখাযায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সহ ফ্লেক্স । প্রতিটি ফ্লেক্সে লেখা থাকে‘ আমরা দাদার অনুগামী’।স্বপন দেবনাথের খাসতালুকে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া এমন ফ্লেক্স  ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই জনমানসে শোরগোল  পড়ে যায় । ফ্লেক্স সংক্রান্ত খবর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কানে যেতে তিনিও ক্ষুব্ধ হন ।  এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স খুলে ফেলতে তৎপর হন মন্ত্রী ও কালনা ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি  শান্তি চালের অনুগামীরা ।স্থানীয়রা বলেন, রাজ্যের বিদ্রোহী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স খুলতে স্বয়ং কালনা ১ নং ব্লকের সভাপতিকে ও তাঁরা তৎপর হতে দেখেন । এমন ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব । ‘আমরা দাদার অনুগামী ’বলে দাবি করে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স শনিবারই জেলায় প্রথম দেখাগেল এমনটা নয় । ইতিপূর্বে ‘আমারা দাদার অনুগামী’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে  কিছু যুবক কাটোয়ায় ‘মাস্ক’ বিলি ও বস্ত্র বিলির অনুষ্ঠান করেছিল । মন্তেশ্বরেও জানান দিয়েছিল তাঁদের উপস্থিতি ।এবার একই রকম ফ্লেক্সের সমাহার দেখাগেল পূর্বস্থলী ও মেমারিতে ।জানা গিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আরও বিভিন্ন ব্লকে সক্রীয় হয়েছে দাদা অর্থাৎ রাজ্যের  পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা ।ওইসব ব্লকেও এমন ফ্লেক্স ঝুলতে দেখতে পাওয়াটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র ।বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে এই বিষয়টিকেই তাৎপর্যপূরণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের মত দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত থেকেও যাঁরা  তৃণমূলের কোন কমিটিতে ঠাঁই পাননি, তাঁরাই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন । তৃণমূল নেতৃত্ব এই ঘটনাকে বিজেপির চক্রান্ত বলে মুখে দাবি করলেও তলেতলে শুরু হয়েছে শুভেন্দু অনুগামীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া ।  তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র তথা পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সহ- সভাধীপতি দেবু টুডু এই প্রসঙ্গে যদিও বলেন , “কারা ওইসব ফ্লেক্স লাগাচ্ছে তা আমাদের জানা নেই । অস্থিরতা তৈরি করতে বিজেপি ও সিপিএমের লোকজন রাতের অন্ধকারে ওইসব ফ্লেক্স লাগিয়ে দিতে পারে । “ অন্যদিকে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বক্তব্য , ’কে কোথায় কি করছে বলতে পারবো না। আমরা একমাত্র  দিদির অনুগামী । তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । দিদি সবার নেত্রী“ । তবে সিপিএম নেতা অশেষ কোনার ও  বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পিন্টু ভট্টাচার্যের দাবি, “ যা ঘটছে তার  সবটাই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।“  

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।